শনিবার, ১১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭

এন্টোনি এবং ক্লিওপেট্রা

এন্টোনি এবং ক্লিওপেট্রা উইলিয়াম শেক্সপিয়রের বিখ্যাত একটি রোমান্টিক বিয়োগান্ত নাটক। ধারণা করা হয় এটা লেখা হয়েছিল ১৬০৩ থেকে ১৬০৭ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে। এটা প্রথম কাগজে মুদ্রিত হয় ১৬২৩ খ্রিস্টাব্দে। নাটকটির মূল ধারণাটি নেয়া হয়েছিল আরেক বিখ্যাত ইংরেজ অনুবাদক থমাস নর্থের গ্রিক থেকে ইংরেজিতে অনূদিত গ্রিক ঐতিহাসিক প্লুটার্ক-এর লাইভস গ্রন্থ থেকে।
সেখানে পার্থিয়ান যুদ্ধ থেকে শুরু করে ক্লিওপেট্রা আর মার্ক এন্টোনি প্রেমকাহিনি ও ক্লিওপেট্রার আত্মহত্যার মধ্য দিয়ে সমাপ্তি ঘটেছিল এই নাটকের। অনেকেই মনে করেন যে এই নাটকে ক্লিওপেট্রার চরিত্রটি শেক্সপিয়রের যাবতীয় কাজগুলোর মধ্যে সবচেয়ে জটিল একটি চরিত্র নির্মাণ। ক্লিওপেট্রা চরিত্রটি একই সময়ে ছিল খুব নিষ্ফলা, নিরর্থক ঘৃণার উদ্রেককারী আবার একইসাথে ক্লিওপেট্রা আর এন্টোনিকে বিশাল বিয়াগান্তে একত্রিত করে মহিমা প্রকাশের চেষ্টা করা হয়েছে। এই বিপরীত প্রচেষ্টার কারণে নাটকটির বিষয়ে দ্বিধাবিভক্ত সমালোচনা পাওয়া যায়।

মার্ক এন্টোনি হলো একজন রোমান রাজনীতিবিদ ও সেনাপতি। একজন দক্ষ প্রশাসক ও সেনাবাহিনীর কমান্ডার হিসেবে তিনি তার মা’র চাচাত ভাই তত্কালীন রোম সেনাপতি ও রাষ্ট্রনায়ক জুলিয়াস সিজারের একনিষ্ঠ সমর্থক ছিলেন। জুলিয়াস সিজারের গুপ্তহত্যার পর তিনি আর অক্টাভিয়ান ও লেপিডাস মিলে একটি রাজনৈতিক জোট তৈরি করেছিলেন। এই জোটের তিন জনই পদাধিকার বলে রাষ্ট্রক্ষমতায় যাওয়ার উপযুক্ত ছিলেন। কিন্তু পরবর্তী সময়ে একটি গৃহযুদ্ধের প্রেক্ষিতে অক্টাভিয়ান ও এন্টোনির মধ্যে মতদ্বৈততা তৈরি হয়। সেই যুদ্ধটা ছিল রোমান প্রজাতন্ত্রের সর্বশেষ যুদ্ধ। এই যুদ্ধে আলেকজান্দ্রিয়াতে এন্টোনি পরাজিত হয় অক্টাভিয়ানের হাতে। তারপর তিনি আর তার প্রেমিকা ক্লিওপেট্রা আত্মহত্যার মাধ্যমে এর সমাপ্তি ঘটান।

অন্যদিকে ক্লিওপেট্রা ছিলেন পৌরাণিক মিশরের সর্বশেষ ফারাও সম্রাজ্ঞী। তিনি ছিলেন টলেমিক ডাইনেস্টির একজন সদস্য। টলেমিক ডাইনেস্টি হলো মহান আলেকজান্ডারের মৃত্যুর পর গ্রিক বংশোদ্ভূত একটা পরিবার যারা পরবর্তীকালে মিশরকে শাসন করেছিল। টলেমিসরা তাদের সাম্রাজ্যকালীন সময়ে গ্রিক ভাষায় কথা বলত। তারা মিশরীয় ভাষায় কথা আদান-প্রদান করা অস্বীকার করেছিল। এই কারণেই তত্কালীন মিশরে অফিসিয়াল ভাষা হিসেবে মিশরীয় ভাষার সঙ্গে সঙ্গে গ্রিক ভাষাটাও ব্যবহূত হতো। ক্লিওপেট্রা প্রথমত তার বাবা দ্বাদশ টলেমির সঙ্গে যৌথভাবে রাজ্য শাসন করতেন। বাবার মৃত্যুর পর ভাই ত্রয়োদশ টলেমি ও চর্তুদশ টলেমির সঙ্গে যৌথভাবে শাসনকাজ চালান। এই দুই ভাইকেই তিনি মিশরীয় রীতি অনুযায়ী পরে বিয়ে করেন এবং ধারাবাহিকভাবে মিশরের একক ক্ষমতার অধিকারী হন।

গ্রিক সম্রাট জুলিয়াস সিজারের গুপ্তহত্যার পর ক্লিওপেট্রা সিজারের যোগ্য ও বৈধ উত্তরাধিকারী জুলিয়াস সিজার অক্টাভিয়ানস-এর বিপরীতে মার্ক এন্টোনির সঙ্গে জোট বাধেন। মার্ক এন্টোনির সঙ্গে প্রণয় ও বিয়ের পর ক্লিওপেট্রা যমজ সন্তান জন্ম দেন। তারা হলো ক্লিওপেট্রা সিলেন দ্বিতীয় এবং আলেকজান্ডার হেলিওস। ভাইদের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে তার কোনো সন্তান হয়নি। অক্টাভিয়ান সেনাবাহিনীর কাছে একটিউম যুদ্ধে হারার পর এন্টোনি আত্মহত্যা করেন, ক্লিওপেট্রাও স্বামীর অনুসরণ করে নিজেকে হত্যা করেন। এর পর মিশর রোমানদের একটি অধিগত রাষ্ট্রে পরিণত হয়।

প্রাচীন রোমান তথ্যমতে ক্লিওপেট্রা নিজেকে মিশরীয় বিষাক্ত কোবরা সাপের কামড়ে হত্যা করেছিলেন। তবে সবচেয়ে পুরাতন তথ্য পাওয়া যায় স্টারবোর কাছ থেকে যে তিনি সেই সময় বেঁচে ছিলেন এবং আলেকজান্দ্রিয়াতে ছিলেন। তিনি বলেন যে এই বিষয়ে দুটো তথ্য আছে। প্রথমত, তিনি বিষাক্ত রস খেয়ে আত্মহত্যা করেছিলেন। দ্বিতীয়ত, তার বুকে বিষাক্ত গোখরা সাপের কামড়ে তিনি আত্মহত্যা করেছিলেন। অনেক রোমান কবি সেই ঘটনার দশ বছর পর এটাকে উল্লেখ করেছিলেন এই ভাবে যে ক্লিওপেট্রা দুটো সাপের কামড় খেয়ে নিজেকে হত্যা করেছিলেন।

ওই ঘটনার একশ ত্রিশ বছর পর গ্রিক ঐতিহাসিক প্লুটারক লেখেন যে গ্রিক সম্রাট এন্টোনিকে যুদ্ধে পরাজিত করে এন্টোনির স্বেচ্ছায় মৃত্যুবরণের পর তার লোকজনদের পাঠিয়েছিলেন ক্লিওপেট্রাকে জীবিত ধরে নিয়ে আসার জন্য। তিনি লোকদেরকে বলেছিলেন যে ক্লিওপেট্রাকে চোখে চোখে রাখতে যেন সে কিছুতেই আত্মহত্যা করতে না পারে। কিন্তু ক্লিওপেট্রা অক্টাভিয়ানের লোকজনদেরকে ধোঁকা দিয়ে আত্মহত্যা করতে সক্ষম হন।

প্লুটারক আরো দাবি করেন যে ক্লিওপেট্রার পাশেই একটা ঝুড়িতে কোবরা সাপ ছিল। ক্লিওপেট্রা কামড় খাওয়ার জন্য সেটার দিকে হাত বাড়িয়ে দেন। তিনি এটাকে খুঁচিয়ে রাগিয়ে তুলেছিলেন যেন সাপটা তাকে কামড়ে দেয়। তবে চূড়ান্ত চিত্রটা আমাদের কাছে নিয়ে আসেন শেক্সপিয়র। তিনি বলেন যে ক্লিওপেট্রা একটা কোবরা সাপকে তার বুকের ওপর রাখেন তাকে কামড়ানোর জন্য। সেই সাপের কামড়েই তিনি মারা যান।

গ্রিক দার্শনিক ঐতিহাসিক প্লুটারক আমাদেরকে এন্টোনির মৃত্যুর বিষয়েও একটা ধারণা দিয়েছেন। তাঁর মতে, এন্টোনির সেনাবাহিনী যখন তাকে পরিত্যাগ করে যুদ্ধক্ষেত্রে একা ফেলে চলে গেল তখন তিনি চিত্কার করে বলছিলেন যে ক্লিওপেট্রা তার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। তার এই ঘোষণা শুনে ক্লিওপেট্রা তার ক্রোধের ভয়ে নিজেকে একটা স্মৃতিসৌধের ভেতর লুকিয়ে রাখেন। বার্তাবাহকের মাধ্যমে এন্টোনির কাছে খবর পাঠান যে তিনি মারা গেছেন। এন্টোনি বার্তাবাহকের খবর শুনে সঙ্গে সঙ্গেই মনের দুঃখে নিজের পেটে ছুরি চালিয়ে ঘোড়ার পিঠে নেতিয়ে পড়েন। তখন আরেকজন বার্তাবাহক তাকে ক্লিওপেট্রার কাছে নিয়ে যাওয়ার জন্য ক্লিওপেট্রার কাছ থেকে হুকুমনামা নিয়ে আসেন। মৃত্যুপথে এন্টোনি যখন শুনলেন যে ক্লিওপেট্রা বেঁচে আছে তখন তিনি প্রচুর আনন্দিত হন। তাকে যখন স্মৃতিসৌধের কাছে নেওয়া হলো তখন ক্লিওপেট্রা মূল ফটক না খুলে ঘরের জানালা দিয়ে রশি ঝুলিয়ে দেন তাকে ওপরে ওঠানোর জন্য। তাকে নিরাপদে ওপরে ওঠানোর পর একটা বিছানায় শুইয়ে দেওয়া হলো আর ক্লিওপেট্রা নিজের কাপড় ছিঁড়ে এন্টোনির ক্ষতস্থান বেঁধে দেন। নিজের বুক চাপড়িয়ে তিনি তখন কাঁদছিলেন। এন্টোনি তাকে শান্ত হতে বলে এক গ্লাস মদ খেতে চাইলেন। তারপর মারা গেলেন।

গ্রিক ঐতিহাসিক প্লুটার্ক-এর লাইভস গ্রন্থ থেকে সূত্র ধরে শেক্সপিয়র রচনা করেছিলেন তাঁর বিখ্যাত বিয়োগান্ত নাটক এন্টোনি ও ক্লিওপেট্রা। ১৫৭৯ খ্রিষ্টাব্দে ইংরেজ অনুবাদক স্যার থমাস নর্থ ‘লাইভস অব দ্য নবল গ্রাসিআনস অ্যান্ড রোমনস কম্পায়ারড টুগেদার’ অনুবাদ করেন। সেখান থেকে লাইফ অব মার্ক এন্টোনিকে নিয়ে রচনা করা হয় এন্টোনি অ্যান্ড ক্লিওপেট্রা নাটকটি। থমাস নর্থের মূল অনূদিত বইয়ের বড় বড় অংশ সরাসরি হুবহু নাটকটিতে ব্যবহার করেছেন শেক্সপিয়র। আবার মাঝে মাঝে শেক্সপিয়র এমন সব দৃশ্য যোগ করেছেন যেটা মূল বইয়ের কোথাও নেই। কিছু কিছু যুদ্ধ বর্ণনায় এবং যুদ্ধক্ষেত্রের বর্ণনায় শেক্সপিয়র অনেক দৃশ্যপট ও স্থান পরিবর্তন করে ফেলেছেন।

নাটকটির মূল কাহিনি ছিল রাজ্যক্ষমতা দখলে নানা রকম ষড়যন্ত্র, তার মধ্যে এক নারীর প্রেম, রহস্যময়ী সেই নারীর বহুরূপী চরিত্র অবশেষে প্রেমের জন্য দুটি হূদয়ের পারস্পরিক ভুল বোঝাবুঝিতে নিজেদেরকে হত্যা করা। যার কেন্দ্রীয় চরিত্রে ছিল মার্ক এন্টোনি এবং সুন্দরী মিশরীয় ফারাও ক্লিওপেট্রা।

মার্ক এন্টোনি রোম সাম্রাজ্যের ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার প্রথম তিন যোগ্য উত্তরাধিকারীর একজন ছিলেন। কিন্তু তিনি  মিশরীয় সম্রাজ্ঞী সুন্দরী ক্লিওপেট্রার প্রেমে হেরে গিয়ে যুদ্ধের ময়দানে নিজের সৈনিক সুলভ আচরণ ও পেশাদারিত্বের কথা ভুলে গেলেন। রোমের অভ্যন্তরীণ সমস্যাগুলোকে দুই হাতে সরিয়ে দিয়ে ডুবে গেলেন অন্য কাজে। এমনকি নিজের তৃতীয় স্ত্রী ফালভিয়া যখন রোম সম্রাট সিজারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে মারা গেল তখন সেটাকেও তিনি পাত্তা দিলেন না। রোম সম্রাট সিজার এন্টোনিকে ভূ-মধ্যসাগরের দুর্ধর্ষ ডাকাত সেক্সটাস পোম্পি, মিনিকরেটস ও মিনাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে আলেকজান্দ্রিয়া থেকে রোমে ফিরে আসার জন্য ডেকে পাঠালেন। আলেকজান্দ্রিয়াতে অন্যদিকে ক্লিওপেট্রা বারবার এন্টোনিকে রোমে ফিরে যাওয়ার জন্য নিষেধ করছিলেন। কিন্তু তারপরেও এন্টোনি রোমে ফিরে গেলেন।

রোমে ফেরার পর তাকে বুদ্ধি দেয়া হলো—সিজারের বোন অক্টাভিয়াকে বিয়ে করে ক্ষমতা পাকাপোক্ত করার জন্য। অন্যদিকে ক্লিওপেট্রা যখন এই খবর শুনতে পেলেন তখন তার কাছে যে বার্তাবাহক সংবাদটা বহন করে নিয়ে এসেছিল তাকেও তিনি কঠিন শাস্তি দিলেন। পরে সভাসদ তাকে এই বলে সান্ত্বনা দিল যে এন্টোনি যাকে বিয়ে করেছে সে দেখতে খাটো বিশ্রী চুলের খুব বাজে দেখতে একজন মহিলা।

অন্যদিকে রাজ্য শাসন নিয়ে তিন উত্তরাধিকারীর মধ্যে প্রচুর মতভেদ তৈরি হলো। এন্টোনি ক্ষেপে গিয়ে সভাসদ থেকে বের হয়ে এসে মিশরের আলেকজান্দ্রিয়াতে চলে আসেন। তারপর নিজেকে আর ক্লিওপেট্রাকে মিশরের শাসনকর্তা ঘোষণা করলেন। তিনি সিজারকে এই বলে দোষ দিলেন যে সিজার তার সঙ্গে কথার বরখেলাপ করেছে। তাকে ভূ-মধ্যসাগরীয় ডাকাতদের সঙ্গে সংঘর্ষের পর যেই দ্বিপগুলো দেয়ার কথা ছিল সেগুলো দেয় নাই। এন্টোনি সিজারের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল। সে স্থলভাগকেই বেছে নিল যুদ্ধের জন্য। অন্যদিকে অক্টাভিয়ান পানিপথেই যুদ্ধ করতে চাইল। যুদ্ধের মাঝামাঝি সময়ে ক্লিওপেট্রা তার ষাট-টা যুদ্ধ জাহাজ নিয়ে পালিয়ে গেল। এন্টোনি সঙ্গে সঙ্গে তার অনুসরণ করে নিজের সৈন্যবাহিনীকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিয়ে পালিয়ে গেল।

সেই মুহূর্তে অক্টাভিয়ান বার্তাবাহকের মাধ্যমে ক্লিওপেট্রার কাছে খবর পাঠাল সে যেন এন্টোনিকে ছেড়ে তার কাছে আলেকজান্দ্রিয়াতে চলে আসে। তিনি তখন বার্তাবাহকের সঙ্গে চলে যাওয়ার পায়তারা করছিলেন। এই দ্বিমুখী চরিত্রের কথা শুনে এন্টোনি আবার ক্ষেপে গেলেন। কিন্তু তিনি তার ভালোবাসার মানুষটাকে ক্ষমা করে দিলেন। তাকে অনুরোধ করলেন তার পক্ষ নিয়ে যেন যুদ্ধ করে। যুদ্ধের মধ্যেই এন্টোনির সৈন্যরা একটা আশ্চর্য খবর শুনতে পেল। তারা শুনল যে ঈশ্বর হারকিউলিস এন্টোনির নিরাপত্তা উঠিয়ে নিয়েছেন। এই খবর শুনে সৈন্যরা এন্টোনিকে পরিত্যাগ করে অক্টাভিয়ানের পাশে চলে গেল।

এন্টোনি স্থলপথে অক্টাভিয়ানের বিরুদ্ধে  যুদ্ধ ভালোই চালিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু মাঝামাঝি সময়ে হঠাত্ করেই কোনো ঘোষণা ছাড়াই যখন ক্লিওপেট্রা তার ষাটটা যুদ্ধ জাহাজ নিয়ে কেটে পড়ল তখনই যুদ্ধের মোড় ঘুরে গেল। এন্টোনি মনে মনে বলল, ‘এই পাজি মিশরিয়ান আমার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। বিশ্বাসঘাতকতার জন্য এন্টোনি সিদ্ধান্ত নিল ক্লিওপেট্রাকে হত্যা করবে। অপরদিকে ক্লিওপেট্রা ঠিক করল পুনরায় এন্টোনির ভালোবাসা পাওয়ার জন্য সে একজন বার্তাবাহককে দিয়ে এই খবর পাঠাবে যে সে নিজে আত্মহত্যা করেছে।

কিন্তু তার পরিকল্পনাটা কাজে লাগল না। বরং এন্টোনি এই খবর শুনে নিজেই নিজের পেটে ছুরি চালিয়ে দিল। এন্টোনির মারা যাওয়ার পর অক্টাভিও চেয়েছিল ক্লিওপেট্রাকে ফিরিয়ে নিতে। কিন্তু ক্লিওপেট্রা তাতে রাজি হলো না। বরং সে নিজেকে বিষাক্ত সাপের কামড়ে হত্যা করে সব কিছুর সমাধান করল।

পুরো নাটক জুড়ে একটা বিষয় বেশি প্রাধান্য পেয়েছে। সেটা হলো বিরোধিতা। রোম আর ইজিপ্ট, ভালোবাসা আর লোভ, পুরুষ আর নারীর মধ্যে পরস্পর সম্পর্কের বিচিত্র বিরোধই প্রকট হয়ে উঠেছে নাটক জুড়ে। তবে শেষ পর্যন্ত ভালোবাসারই জয় হয়েছিল। ভালোবাসা তার নিত্যতা, অমরত্বকে প্রমাণ করতে পেরেছিল এন্টোনি আর ক্লিওপেট্রার আত্মহননের মাধ্যমে।

রাফিক হারিরি