প্রথমে বলে নেই, আমি মৌলবাদী নই, আমি বিশ্বাসী। আর একাডেমিক দিক থেকেই কথা গুলো বলার চেষ্টা করেছি, তাতে যদি কোন সাম্প্রদায়িকতা থাকে মাফ করবেন। এখন মূল কথায় আসি, সাম্প্রতিক বিষয় রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম।সংখ্যাগরিষ্ঠের ভিত্তিতে হাইকোর্ট রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম না রাখার ব্যাপারটি খারিজ করে দিয়েছে। এতে সংখ্যাগরিষ্ঠ খুশি হয়েছে এবং সংখ্যালঘু অখুশি হয়েছে।এখন কথা হলো, রাষ্ট্রধর্ম
ইসলাম না থাকলেই কি আমরা সেকুলার হয়ে যাব? আর থাকলেই কি সাম্প্রদায়িক হয়ে যাব? আমরা এটা কেন বুঝি না যে, সাম্প্রদায়িকতা সংবিধানে নয়, সাম্প্রদায়িকতা আমাদের মনে। সংবিধানে কি বলা হয়েছে, নাগরিকদের কি দায়িত্ব-কর্তব্য, কি অধিকার আছে, আমার মনে হয় দেশের নব্বই ভাগ লোকের তা জানা নেই, এমনকি আমি নিজেও জানি না সংবিধান আমাকে কতটুকু অধিকার দিয়েছে। সংবিধানের সাথে তো আমাদের মনের কিংবা জ্ঞানের কোন যোগসূত্রই নাই, তাহলে এটা নিয়ে আমাদের এত মাথা ব্যাথা কেন? তার চেয়ে আমার মনে হয়, আমাদের মনের মধ্যে যে সাম্প্রদায়িকতা আছে, সেটা দূর করা উচিত আগে। এখন কথা হলো, শুধু কি আমাদের মনের ভিতর থেকে সাম্প্রদায়িকতা দূর করা উচিত? না, আমাদের দায়িত্ব আমাদের পরিবারের সদস্যদের, তারপর আশে পাশের মানুষদের এ সম্পর্কে সচেতন করা উচিত, হোক না আমি হিন্দু ,মুসলিম অথবা অন্য কোন ধর্মের অনুসারী। এটা আমাদের সামাজিক কর্তব্য, যখনই আমরা কাউকে কোন রকম সাম্প্রদায়িক আচরণ করতে দেখব, আমাদের উচিত হবে তাকে সচেতন করা।
ইসলাম না থাকলেই কি আমরা সেকুলার হয়ে যাব? আর থাকলেই কি সাম্প্রদায়িক হয়ে যাব? আমরা এটা কেন বুঝি না যে, সাম্প্রদায়িকতা সংবিধানে নয়, সাম্প্রদায়িকতা আমাদের মনে। সংবিধানে কি বলা হয়েছে, নাগরিকদের কি দায়িত্ব-কর্তব্য, কি অধিকার আছে, আমার মনে হয় দেশের নব্বই ভাগ লোকের তা জানা নেই, এমনকি আমি নিজেও জানি না সংবিধান আমাকে কতটুকু অধিকার দিয়েছে। সংবিধানের সাথে তো আমাদের মনের কিংবা জ্ঞানের কোন যোগসূত্রই নাই, তাহলে এটা নিয়ে আমাদের এত মাথা ব্যাথা কেন? তার চেয়ে আমার মনে হয়, আমাদের মনের মধ্যে যে সাম্প্রদায়িকতা আছে, সেটা দূর করা উচিত আগে। এখন কথা হলো, শুধু কি আমাদের মনের ভিতর থেকে সাম্প্রদায়িকতা দূর করা উচিত? না, আমাদের দায়িত্ব আমাদের পরিবারের সদস্যদের, তারপর আশে পাশের মানুষদের এ সম্পর্কে সচেতন করা উচিত, হোক না আমি হিন্দু ,মুসলিম অথবা অন্য কোন ধর্মের অনুসারী। এটা আমাদের সামাজিক কর্তব্য, যখনই আমরা কাউকে কোন রকম সাম্প্রদায়িক আচরণ করতে দেখব, আমাদের উচিত হবে তাকে সচেতন করা।
কিন্তু প্রকৃত পক্ষে আমরা কি করি? আমরা রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম হবে কি হবে না এটা নিয়ে চায়ের কাপে ঝড় তুলি।অন্যদিকে রাজনৈতিক দলগুলো এটা দিয়ে যে তাদের স্বার্থসিদ্ধি করছে, সে নজর দেওয়ার সময় আমাদের নেই।সাম্প্রদায়িকতার খুব সাধারণ একটা উদাহরণ হল- হিন্দুরা ‘পানি’ কে ‘জল’ বলে, বাঙালি মুসলমানরা ‘জল’ শব্দ ব্যবহার করে না অথচ এটি বাংলা শব্দ। আবার অন্যদিকে কোন মুসলমান যদি হিন্দু বাড়িতে যায় তবে তাকে ঘরে যেতে দেওয়া হয় না অথবা দেওয়া হলেও পরে ঘর ধুয়ে মুছে পরিষ্কার করা হয়। এখন অনেকই বলতে পারে যে, এসব আমাদের বাড়িতে হয় না। কিন্তু আপনার আমার আশে পাশেই হয়, একটু তাদের বুঝাতে চেষ্টা করেন না হয় অন্তত একবার হলেও তাদের বলুন যে মানুষ হিসেবে আমাদের কি দায়িত্ব। আসল ব্যাপার হল, আমরা বলব না, কারণ আমরা বাঙালিরা রাজনৈতিক বেশি, কিন্তু সামাজিক নই। অর্থাৎ আমরা রাষ্ট্র কি করল তা নিয়ে মাথা ঘামাই বেশি, কিন্তু সমাজে আমাদের কি কর্তব্য তা নিয়ে মাথা ঘামাই না। আমার মনে হয়, এ পর্যন্ত যতগুলো সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হাঙ্গামা হয়েছে, তা মূলত রাজনৈতিক ফায়দা লুটার জন্যই। কিন্তু সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হাঙ্গামার চেয়ে এদেশে ভাইয়ে ভাইয়ে জমি- জমা নিয়ে খুনোখুনি বেশি হয়।
এরিস্টটল বলেছিলেন, ” মানুষ সামাজিক ও রাজনৈতিক জীব।” এখন আমাদের বাঙালিদের বেলায় বলতে হবে , বাঙালি বা বাংলাদেশীরা আগে রাজনৈতিক এবং পরে সামাজিক জীব। সাম্প্রদায়িকতা দূর করা এতটাই সহজ যে, একজন মানুষ হিসেবে আমাদের আরেকজন মানুষের প্রতি কিছু সামাজিক দায়িত্ব পালন করতে হবে, তাতেই হবে। তার ধর্ম কি বর্ণ কি সেটা আদৌ কোন চিন্তার বিষয় হতে পারে না, হোক সে সংখ্যালঘু অথবা সংখ্যাগুরু।
লেখক: শিক্ষার্থী, রাষ্ট্রবিজ্ঞানবিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, safiasharmin1@gmail.com